Sunday, May 5, 2019

কবিতা

তবুও ভালোবাসি
মুহাম্মদ নাজমুল হক

এই যে , আমার অফুরন্ত সময়
আমার নিষিদ্ধ রাত ।
ধর , আমি একলা ,
নিঃসঙ্গ তো ওই চাঁদ ।
তবুও  ভালোবাসি  ।
ভালোবাসে ওই পথিকটাও , বন্ধুর মরিচিকা ভরা পথ ।
কে জানে ওই চাঁদ নয় , এই জোনাকীটাই শেষ সম্বল !
তবুও ভালোবেসে যায় ।
ওই চাঁদ , আলো ,অন্ধকার আবার এই অরণ্য কিংবা সমুদ্রের গর্জন ।
জানি,ঝড় আসবে অমবস্যায় ।
হইহুল্লোড় দৌলে , শান্তির প্রার্থনা ।
রোগ-শোক মৃত্যু ভয় ,দুঃচিন্তা অবিরাম ।
কালকেও বাঁচতে হবে - জীবনযুদ্ধ !
কটাক্ষ করে শত্রু , অনুপ্রেরনায় মিত্র ।
বাঁচতে যে হবে ,- অপেক্ষা ।
তবু ভালোবাসি অনুপ্রেরণা ।
আর প্রতিক্ষা নয় , অপেক্ষা
আর একটু সঞ্চয় কর ধৈর্য্য ।
আমি আসছি ,- অনুপ্রেরণা ।
তবুও ভালোবাসি ।

Saturday, May 4, 2019

বন্ধু বিচ্ছেদ

মুহাম্মদ নাজমুল হক

আমি তখন মেডিকেলে সেকেন্ড প্রোফের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। আর তখনি যে এমন একটা ঘটনা ঘটবে, আর আমার জীবন এভাবে বদলে যাবে তা কখনো ভাবিনি। ওই সময়টাতে আমি আমার একাডেমিক পড়ার পাশাপাশি অনেক বই পড়তাম। আর রোমাঞ্চকর  কিংবা গোয়েন্দাগিরি আমার পছন্দের প্রথম দিকে থাকত। সেই সুত্রে শার্ল্কস হোমস খ্যাত স্যার আর্থার কানন ছিলেন প্রিয় একজন ব্যক্তিত্ব।
তো ঘটনাটা যা ঘটেছিল ; ওই সময়ে ফাইনাল ইয়ারে পড়া তিন বন্ধু। মুশফিক, মাহতাব আর ইয়াসমিন যাদের বন্ধুত্বের বন্ধন এতটাই শক্তিশালী যে এদের আলাদা করা কোন ভাবেই সম্ভব নয়। ***
তারা ব্রিলিয়ান্ট তাতেও কারোর কোন সন্দেহ ছিলনা। এদের ধৈয্য নিয়েও গর্ব করার মত। সারাদিন গবেষণা নিয়ে পড়ে থাকে। তাদের বেশ কয়টা প্রবন্ধ প্রকাশ পেয়েছিল দ্যা ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব মেডিসিন এ।
একদিন এলো সেই কলঙ্কিত দিন। কলেজের করিডোরে লাইট ক্যামেরার ফুলঝুরি, যেন কোন হলিউডি সিনেমার শুটিং চলছে। আসলে প্রেস মিডিয়া আর পুলিশ  যাদের এখানে আসার কোন কথা ছিলনা।
সময়টা তখন রাত ৮ঃ৪০মিন, বড়জোর ৯টা হবে। আমি হোস্টেলের ডাইনিং থেকে রাতের খাওয়া শেষ করে আমার ঘরে এসেছি মাত্র। এরপর পুলিশের গাড়ির শব্দ একটা এ্যামবুলেন্স আর কতগুলো মানুষের চেঁচামেচি।
মাহতাব মারা গেছে। আমাদের মেডিকেলের আবাসিক চিকিৎসক ডাঃ নিমাই চন্দ্র তা নিশ্চিত করেছেন। কিন্তু কিভাবে মারা গেছেন? আপাত দৃষ্টিতে যা মনে হচ্ছে ওর হার্ট ফেইলিওর হয়েছে। মৃত্যুটা আসলেই কি স্বাভাবিক নাকি মার্ডার তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছেনা। মৃত্যুর খবরটা ইয়াসমিন ই প্রথম ফোন করে নিমাই স্যারকে জানান। এখন ডাঃ মোঃ রহিম উল্লাহ স্যার এসে গেছেন। উনি আমাদের কলেজের অধ্যক্ষ। মাহতাবের লাশটা দেখে ডাঃ নিমাই কে শুধু বললেন কিভাবে হলো তুমি কি কিছু জানতে পেরেছো। উনি বললেন ওরা তিনজন মিলে আজ প্রায় আট ঘন্টা ল্যাবে ছিল। আর মাহতাবের মৃত্যু হয়েছে এখন প্রায় ৩০ মিনঃ আগে। অন্য দুজন কোথায়? স্যার আপাতত ওদের ল্যাবেই আটক করে রাখা হয়েছে আপনি কি বলেন তার জন্যই আমরা অপেক্ষা করছি।
মাহতাবের বাসা ঢাকার কেরানিগঞ্জ। এতক্ষণে ওর মা বাবা চলে এসেছে। মা বলা শুরু করলো মাহতাব কই আমার মাহতাব কই ওর মুখটা আমারে দেখাও ; এইবার আমার দেখার সুযোগ হলো মাহতাবের লাশটা। আমি কিছু ভাবছি তখনি মাহতাবের মা চিৎকার দিয়ে বলে ওঠলে না আমার মানিক এমনি এমনি মারা যায়নি ওরা একে বিষ খাইয়ে মেরে দিছে, আপনারা দেখছেন না ওর শরীর বিষে কেমন নীল হয়ে গেছে? উনি মনে হয় আমাদের সবার কাছেই প্রশ্ন করে ফেললেন। আপ্নারা কেমন ডাঃ আমি বলে দিচ্ছি যারা আমার মাহতাবকে মেরে ফেলেছে তারা যেন কোনভাবেই পার না পায়। সত্যি তো মাহতাবের সমস্ত শরীর নীল হয়ে আছে, চোখ দুটো কেমন বের হয়ে আসছে, যদিও চোখে হাতটা আমার নিজের তদন্তের স্বার্থে দেয়া। আর শরীরটাও প্রচুর ঠান্ডা, চামড়া গুলো কেমন নেতিয়ে গেছে। আমার অবসারভেশন থেকে মনে হচ্ছে এর মৃত্যু আরো অন্তত তিন ঘন্টা আগে হয়েছে। কেমন সবকিছু আমার কাছে জট পাকিয়ে যাচ্ছে। যদি মাহতাবের মৃত্যু হয়ে যদি এক ঘন্টাই হয়ে থাকে তবে ওর শরীরের এই হাল কেন?  তার মানে কি এটা প্রিপ্লানেড মার্ডার?
*****চলবে****